সাদাত হোসাইন-এর জনপ্রিয় চারটি বই (হার্ডকভার) | Sadat Hossain-er Jonoprio Charti Boi (Hardcover)

সাদাত হোসাইন-এর জনপ্রিয় চারটি বই (হার্ডকভার)

সত্যটা মিথ্যা, সে এখানে নেই, সে এসে বসুক পাশে ও শঙ্খচূড় (চারটি বই একত্রে)

৳ 1,947

৳ 1,558
২০% ছাড়
Quantity

0

৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY

প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়;  ১১৯৯+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৬৯৯+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER

বই সংক্ষেপ
লেখক

সত্যটা মিথ্যা: শেষরাতের দিকে বৃষ্টি কমে এসেছে। রেজা বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরালেন। সীমান্তবর্তী ছােট্ট এই শহরের নাম বনগিরি। এর বেশিরভাগই পাহাড় আর জঙ্গল। দিন পনেরাে হলাে তিনি এখানে এসেছেন। এখনাে শহরের গতিপ্রকৃতি ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি। তবে এটুকু বুঝতে পারছেন, এখানে চারদিকে অবিরাম ফিসফাস। লুকোচুরি খেলা। সেই খেলায় তিনি পুলিশ হলেও বাকিরা সবাই চোর নয়। ফলে ঠগ বাছতে গাঁ। উজাড় করতে চান না তিনি। রেজা শেষ মুহূর্তে পিস্তলটা বের করলেন। সাবধানে দেয়াল ঘেঁসে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন দরজার কাছে। হরিণের মতো উৎকর্ণ হয়ে কিছু শোনার চেষ্টা করলেন। কিন্তু পারলেন না। একটা অস্বস্তিকর নীরবতা চারপাশ জুড়ে। যেন কোনো অশনি সঙ্কেত ভেসে বেড়াচ্ছে বাতাসে। আর সেই অশনি সঙ্কেতটাকেই ধরার চেষ্টা করছেন তিনি। আচমকা পর্দাটা সরিয়ে বিদ্যুৎ বেগে ঘরে ঢুকে পড়লেন রেজা। তারপর দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে একপাশে নিচু হয়ে দাঁড়ালেন। শরিফুল সঙ্গে সঙ্গেই আলো ফেলল খোলা দরজায়। সেই আলোতে চোখ রেখে অকস্মাৎ থমকে গেলেন রেজা। তার গা হিম হয়ে এলো আতঙ্কে! এখানে এই দৃশ্য দেখার কথা কল্পনায়ও ভাবেননি তিনি। রোগী দেখার উঁচু বেডে সাদা বিছানার চাদর। সেই চাদর ভিজে জবজব করছে টকটকে লাল রক্তে। যেন এই কিছুক্ষণ আগেই কাউকে চেপে ধরে জবাই করা হয়েছে এই বিছানায়।

সে এখানে নেই: দমকা হাওয়ায় জানালা গলে বৃষ্টির জলে এসে গড়েছে সিঁড়ি লাগোয়া প্রথম ঘরটির দরজায় একজন মানুষ বসে আছে। তবে মানুষটা ঘরের ভেতর দিকে যাচ্ছে না। দেখো যাচ্ছে পিঠ। ঘরের ভেতর থেকে আলো আসছে। সেই আলোয় কেবল মেয়েটার বসে থাকা শরীরের কুঁজো ছায়ামুর্তি বোঝা যাচ্ছে। আর বোঝা যাচ্ছে তার ন্যুজ শরীরের থরথর কম্পন। সে একনাগড়ে চিংকার করে কাঁদছে। কিন্তু উঠে দাঁড়াতে পারছে না। জহির হতভম্ব হয়ে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। তারপর কয়েক কদম হেঁটে সামনে এগোল। কিন্তু দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই যেন জমে গেল সে। ঘরের ভেতরের গা হিম করা দৃশ্যটা চোখে পড়ল তার।

সে এসে বসুক পাশে: আমার যে একটা বিয়ে হয়েছিল, এই পরিচয়টা কি কখনো মুছে ফেলা যাবে? যাবে না।'  ‘আজাদ বলল, ‘জীবনভর ভুল মানুষের কারণে আমাদের জীবনে অসংখ্য ভুল হয়। সেই ভুল থেকে ক্ষত তৈরি হয়। কিন্তু সময় সেই ক্ষত ক্রমশই মুছে দিতে থাকে। আর আমরা যারা বোকা তারাই কেবল সেই ক্ষতগুলো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আবার দগদগে ঘায়ে রূপান্তরিত করি। তাকে শুকাতে দেই না।’ ‘কিন্তু সময় যদি কারো ক্ষত শুকিয়ে দিতে না পারে? যদি তা দুঃসহ স্মৃতি হয়েই থেকে যায়?’ তাহলে সেটি মোছার ব্যবস্থা করতে হবে।’ ‘কীভাবে মুছব?’ ‘অনেক অনেক ভালো স্মৃতি তৈরি করে। ঘরের দেয়ালে নোনা ধরলে কিংবা পলেস্তরা খসে গেলে আমরা কী করি? তেমনই রেখে দেই? যাতে ধীরে ধীরে পুরো বাড়িটাই নষ্ট হয়ে যায়?’ ‘উহু।’ ‘তাহলে? আমরা তাকে ধুয়ে মুছে নতুন রঙ করি। যাতে সেই নোনা ধরা দেয়াল ঝলমলে হয়। নষ্ট হয়ে না যায়। জীবনও তেমনই। এখানেও এর দেয়ালজুড়ে অসংখ্য ক্ষত তৈরি হয়, নোনা ধরে। সেসব ধুয়ে মুছে নতুন রঙ না করলে তা আরও বাড়ে। বাড়তেই থাকে। তারপর নষ্ট করে ফেলে পুরো জীবনটাই।’ ‘ঘরের দেয়াল রঙ করা যায়, জীবনের না। কারণ, জীবনের রঙ কোথাও কিনতে পাওয়া যায় না।’ ‘যায়। কিন্তু আমরা তা কিনতে জানি না।’ ‘কীভাবে?’ ‘জীবনের রঙ হলো ভালো মুহূর্ত, সুন্দর স্মৃতি। দ্যা বিউটিফুল মোমেন্ট অ্যান্ড দ্যা বিউটিফুল মেমোরিজ। তুমি জীবন জুড়ে যত বেশি ভালো স্মৃতি তৈরি করতে পারবে, তত বেশি ওই নোনা ধরা খারাপ মেমোরিজগুলো ঝাপসা হয়ে যেতে থাকবে। ক্ষতগুলো শুকিয়ে যেতে থাকবে।

শঙ্খচূড়: ‘রত্নেশ্বর ঠাকুর কী বললেন জানো? 'কী?' ‘বললেন, যা তোমার নয়, তা তুমি পেয়ে গেলেও তা তোমার নয়। আর যা তোমার, তা তুমি না পেলেও তা চিরকাল তোমারই। সুতরাং কারও ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে পেতে চেয়ো না। বরং ছেড়ে দাও। মুক্ত করে দাও। মনে রেখো, কখনো কখনো মুক্তিই বন্দিত্ব। আবার কখনো বন্দিত্বই মুক্তি।' সৃজিতা কথা বলল না। অরুণ অকস্মাৎ উঠে দাঁড়াল। তারপর বলল, ‘আমি তাই তোমায় মুক্ত করে দিয়েছি সৃজিতা ৷ মুক্ত। কিন্তু..।' ‘কিন্তু কী? ম্লান স্বরে জিজ্ঞেস করল সৃজিতা। ‘কিন্তু আমার যে মুক্তি মেলে না!' অরুণের এই কথাটুকুতে কী যেন কী ছিল। এক অব্যক্ত, ব্যাখ্যাতীত কান্নার অনুভূতি। সেই অনুভূতি কি এক মুহূর্তের জন্যও সৃজিতাকে ছুঁয়ে গেল? অরুণ জানে না। তবে সে কাণ্ডজ্ঞানহীন এক মানুষের মতো সৃজিতার দিকে এগিয়ে গেল। নিঃসংকোচ পদক্ষেপে ক্রমশই এগোতেই থাকল। সৃজিতা একবার চোখ তুলে তাকালেও নড়ল না। অরুণ তার খুব কাছে গিয়ে হঠাৎ থমকে দাঁড়াল। তারপর প্রায় ফিসফিস করে বলল, ‘আমায় তুমি মুক্তি দাও নি কেন? কেন মুক্তি দাও নি? আমায় কেন তুমি বন্দি করে রাখলে?' ‘কেউ কি কাউকে মুক্তি দিতে পারে? যদি সে নিজে না চায়? অরুণ হঠাৎ থমকাল। আসলেই তো তাই। যে বন্দি থাকতে চায়, অন্যের সাধ্য কি তাকে মুক্তি দেয়? সে নিজেই হয়তো সৃজিতার কাছ থেকে মুক্তি চায় না! অরুণ প্রায় নিঃশব্দ স্বরে বলল, 'আমি বড় হয়ে গেছি সৃজিতা। অনেক বড়। আমি আর সেই ছোট্ট অরুণ নেই।' সৃজিতা কথা বলল না। সে নিষ্পলক তাকিয়ে রইল। অরুণ বলল, ‘সবাই ভাবে বয়স মানুষকে বড় বানায়, কথাটা সত্য না। মানুষকে কী বড় বানায় জানো? ‘কী?’ ‘কষ্ট।'

Title:সাদাত হোসাইন-এর জনপ্রিয় চারটি বই (হার্ডকভার)
Publisher: পিবিএস কালেকশন
Number of Pages:867
Country:Bangladesh
Language:Bengali
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...

Reviews and Ratings

How to write a good review

Your Rating
*
Your Review
*
[1]
[2]
[3]
[4]
[5]
0

৳ 0